মহরমের তাৎপর্য: ও শিক্ষা

🌘🌙হিজরি সালের সূচনা এবং মহররম🌙🌒

মহররম হলো ইসলামী চান্দ্রবর্ষের প্রথম মাস। এই মাসের সূচনা হয় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হিজরত-এর স্মৃতিকে কেন্দ্র করে, যখন প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেন।

মহররম মাস অত্যন্ত সম্মানিত মাস আরবী মাস সমুহের মধ্যে অন্যতম যে মাসগুলো আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে নির্ধারিত
🌹 কুরআনের প্রমাণ:🌹

إِنَّ عِدَّةَ الشُّهُورِ عِندَ اللَّهِ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا فِي كِتَابِ اللَّهِ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ ۚ ذَٰلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ ۚ فَلَا تَظْلِمُوا فِيهِنَّ أَنفُسَكُمْ ۚ
“নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট মাসসমূহের সংখ্যা বারোটি, আল্লাহর কিতাবে যা রয়েছে, যেদিন তিনি আসমানসমূহ ও জমিন সৃষ্টি করেছেন। এর মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত ধর্ম। সুতরাং তোমরা এই মাসগুলোতে নিজেদের প্রতি জুলুম করো না।”

(সূরা আত-তাওবাহ ৯:৩৬

এই আয়াত থেকে বুঝা যায়, বারোটি মাসের মধ্যে কিছু মাস বিশেষভাবে সম্মানিত। তার একটি হচ্ছে মহররম
🔹 মহররম মাসের ফজিলত:

রাসুল (সা.) বলেছেন:

"أفضل الصيام بعد رمضان شهر الله المحرم"
“রমজানের পর উত্তম রোজা হলো আল্লাহর মাস মহররমে।”
(সহীহ মুসলিম, হাদীস: ১১৬৩)

🔹 এই হাদীসে "শাহরুল্লাহ" (আল্লাহর মাস) বলে একে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।

🌟আশুরা ও রোজার ফজিলত🌟

মহররম মাসের ১০ তারিখকে বলা হয় "আশুরা"। এই দিনটি বহু ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী:
📜 হাদীসের আলোকে:

নবী(সা.) বলেন,

صيام يوم عاشوراء احتسب على الله ان يكفر السنه التي قبله 

"আমি আশা করি, আশুরার রোযা পূর্ববর্তী এক বছরের গোনাহ মাফ করে দিবে।”
(সহীহ মুসলিম, হাদীস: ১১৬২)

🔹 এই হাদীস থেকে বোঝা যায়, আশুরার রোজা রাখা অত্যন্ত ফজিলতের।

  

🌘যেভাবে এলো আশুরার রোজা 🌒

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন হিজরত করে মদিনায় গেলেন তখন তিনি দেখলেন মহররমের ১০ তারিখ আশুরায় ইহুদীরা রোজা রাখছে তিনি জিজ্ঞেস করলেন তোমরা কেন এই রোজা রাখতেছো তারা বললেন এই দিনে আল্লাহ তায়ালা মুসা আঃ: ও বনী ইসরাঈলের জন্য সমুদ্রের ভিতর দিয়ে রাস্তা করে দিয়েছিলেন ,সে রাস্তায় তারা সাগর পাড়ি দিয়ে তীরে উঠেছিল, এবং ফেরাউন তার দলবল সহ নিমজ্জিত হয়েছিল, সেজন্য শুকরিয়া স্বরূপ হযরত মুসা আঃ:  রোজা রেখেছিলেন । তাই আমরা তার অনুসারীরা ও রোজা রাখি, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বললছ।
نحن احق بموسى منكم فصامه وامر بصيامه

"আমরা মুসার অনুসরণে তাদের চেয়ে বেশি হকদার।" অতঃপর তিনি নিজে রোজা রাখেন এবং সাহাবাদেরও আদেশ করেন।

🌟মহররম মাসে কী করণীয়?🌟

✅ রোজা রাখা (বিশেষ করে ৯ ও ১০ বা ১০ ও ১১ তারিখ)
✅ বেশি বেশি ইবাদত ও তাওবা করা।
✅ অন্যায়, বিদআত ও শোকপ্রদর্শনের অতিরঞ্জন থেকে বিরত থাকা।
✅ কারবালার শিক্ষা স্মরণ করে আত্মশুদ্ধি
🚫 যেসব কাজ পরিহারযোগ্য
❌ শুধু দুঃখ করে মাতম করা (বিদআত)
❌ মাথা ফাটিয়ে শোক প্রকাশ (ইসলামে নিষিদ্ধ)
❌ আশুরাকে শুধুই শোক দিবস বানানো
❌ রান্না-বান্না বা শুভ অনুষ্ঠানকে নিষিদ্ধ মনে করা (বানোয়াট বিশ্বাস)

⭐ উপসংহার⭐
মহররম মাস আমাদের সামনে দুটি দিক তুলে ধরে:
ধ্যাত্মিক দিক: রোজা ও ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ।
শিক্ষা: কারবালার শহীদদের আদর্শ অনুসরণ,
আসুন, মহররম মাসে নিজেকে পরিশুদ্ধ করি, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সাহস অর্জন করি এবং ইসলামি আদর্শে দৃঢ় হই।


🙏পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ, 

আপনার মতামত ও মন্তব্য কমেন্টে জানাতে পারেন। লিখক: মোঃ আব্বাস 

https://mdabbas1.blogspot.com

 Gmail: mdabbasfeni@gmail.com Imo.

 WhatsApp: 01878188565 


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

📝 একই নাটক, ভিন্ন মুখ: জনগণের স্বপ্ন কোথায়?

কারবালার ট্র্যাজেডি: আত্মত্যাগের এক কালজয়ী অধ্যায়"

🕌 মুহূর্তের চিন্তা বদলে দিতে পারে জীবন